Saturday, 13 October 2012

আত্মহত্যা বা মৃত্যুবলয়

আমার স্বপ্ন, আমার কবিতা, ছেঁড়া পাতায় খেলা কাটাকুটি - সব পড়ে আছে একপাশে।আর একপাশে আমি নিজে। খুব রোদে পুড়ে যাওয়া গাছের পাতার সাথে কথা বলে দেখা গেছে ওরা পুড়েছিল পোড়ার আনন্দে। বিশেষ কিছু পেতে চায়নি। ট্রাম লাইনের ধারে পড়ে থাকা একলা রোদটাও বৃষ্টি ভিজেছিল। ভিজতে ভাল লেগেছিল বলে। আত্মহত্যাও বোধহয় এই ধরনের ভাললাগা। ভালবাসাও বলা চলে। শুধু সেটা জীবনের প্রতি না হয়ে বিপরীতমুখীই হয় বারবার। আত্মহত্যা  মানে শূন্য। একটা লোক আত্মহত্যা করল। ইকুয়েশন  করলে দাঁড়াবে সেই লোকটি = ০ ।
আত্মহত্যা বললেই আমার জীবনানন্দকে মনে পড়ে। কেন পড়ে? উত্তর দেওয়াটা খুব মুশকিল। তবু পড়ে। ট্রামলাইনের বুকে পড়ে থাকা রোদ আর জীবনানন্দের বিখ্যাত মুখটি ভেসে ওঠে। আত্মহত্যা একটা ঘটনা, দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া,চরমতম সিদ্ধান্ত। ইচ্ছাও বলা চলে একে অনায়াসে। হয়তো প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হয়ে ঘরে ফেরার লড়াই থেকে পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা। সুখ যদি বলি একে তাহলে , নিজের মত করে জীবনটাকে বাঁচতে না পেরে অন্তত নিজের মত করে মরার সুখ। চরিত্ররা আত্মহত্যা করে প্রতিদিন ,প্রতিমুহূর্তে। আমরা আত্মহত্যা করি। রোদ- ঝড় - জলের এ শহরে নিজেদের কত ইচ্ছেকে কবর দিই নিজেরাই। ছেঁড়া পাতায়, কাটাকুটি করে লেখা কিছু কথায় কত স্বপ্ন হারিয়ে যায় প্রতিদিন। আমরা হারাই। হারিয়ে যেতে দিই। নিজেদের মুছে ফেলি আস্তে আস্তে। শান্ত হাতে। মনে মনে। আর যারা এই মোছার কাজটা মনে মনে করেন না, তারাই চরিত্র হয়ে ওঠেন এপাড়া বা বেপাড়ার গল্পের। স্মৃতির শোকমিছিলের পদাতিক তারা হাঁটতে থাকেন একসাথে। গায়ে অপঘাতের দাগ নিয়ে।... 

No comments:

Post a Comment