Wednesday 25 May 2016

প্রাক্তন

প্রাক্তন কথার অর্থ পুরনো। পূর্বতন বলে পাশ কাটানো যেত অবিশ্যি কিন্তু সেই ছাপটুকু গায়ে না রেখেই ব্যাপারটা একেবারে পুরনো। ঠিক যেন ইট কাঠের ঝুরঝুরে কিছু বালির গুঁড়ো মিশে একেবারে প্রাচীন। অথচ পুরোপুরি প্রাচীনের গণ্ডিতে ঢুকে যে একেবারে স্মৃতির ক্যানভাস ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে ,তাও নয়। রঙ আছে , তবে সে রঙ না থাকারই সামিল। রঙ ছিল কোন কালে। বেশ উজ্জ্বল একটা রঙ। মন কেড়ে নেওয়ার মতই। মন কাড়তে কাড়তে সেটা এসে দাঁড়িয়েছে ধূসরে। হয়তো রাঙ্গানো যেত। হয়তো তুলির দু চারটে আঁচড়েই ফিরে পেত প্রাণ। তুলি টুকু জোটে নি কপালে। ঠেলে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এক্কেবারে দূরে। সকলের চেয়ে আড়ালে। যেখানে ওর দাম কানাকড়িও নয়। এইখানে এসে একটু হোঁচট খেতে হয়। কানাকড়িও নয় ? তাহলে কি বলে ও রয়ে গেল চোখের আড়ালে। থেকে গেল একটু জায়গা নিয়ে? থাকার কথা তো নয়? টেনে হিঁচড়ে বার করে ফেলে দেওয়ার কথা ছিল যেখানে। সেখানে দিব্যি আসর জমিয়ে বসে আছে । অন্ধকারে মনের মাঝে বিদ্যুতচমকের মতো দেখা দেয়। কথা বলে যায় এমনভাবে যেন কিছুই হয়নি এখনো। তুলির দাগের রঙগুলো আবার ফিরে আসে কি? ফিরে আসার কথা ছিল। বলে গিয়েছিল যেন ফিরে আসবে। না বলে চলে যাওয়ার কথা ছিলনা হয়তো। বলে যেতে পারেনি বলে ক্ষমাটুকুও রয়ে গেছে অধরা। 'তবু মনে রেখো' গানটাও কেউ গেয়ে দেয়নি ঠিক সময়ে। তাই ভুলে গেছে দুজনে দুজনকে। হারিয়ে ফেলেছে রাস্তার ধারের গল্পগুলোর মতই। বৃষ্টি ভেজা বাসের জানলার আবছা কাঁচের ওদের প্রতিবিম্ব গুলোও বদলে গেছে হয়ত তাই।অন্যদের মুখ ওদের ছবিতে বসে খুব জ্বালায় ওদের। কি চেয়েছিল আর কি পেয়েছে এই ভাবনাটুকুও আর আসেনা তাই। অভিমানী মুখ দুটো ফোনের ছবিগুলোতে খুঁজতে চায় নিজেদের চেনা মানুষটাকে। এখন যে আর একই নেই। তাকে। সকলে নিজেদের একলা ভাবে বড্ড। সাহস পেয়ে যায়। সেই সাহসেই অন্যের চোখটুকু হারিয়ে যায় হয়তো। অন্যই হয়ে যায় চাহনি। সেই চাহনিকে চেনা বড় দায়। সেই অন্য মানুষটাকে চেনাও। তাই 'হে বন্ধু বিদায়' বলে যে পথ বেঁকেছিল দুজনার, সেই পথ একই থাকে। শুধু দুজনে ভাবতে থাকে যে পথ বেঁকে গেছে বড্ড।  আর দুজনে দুজনকে দেখে বড্ড অচেনা সাজে। যেরকম অচেনা সাজলে হেটে চলে যাওয়া যায় নতুন দুজনের পাশ দিয়ে। ঠিক সেরকম। কোথাও বড্ড ফাঁকা লাগে তবু। বিসর্জনের মতই... প্রাক্তন হতে হতে...

1 comment: